ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫ , ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আরও ২৬ জনের করোনা শনাক্ত জাতীয় বৃক্ষ মেলায় হাজার প্রজাতির গাছের সমাহার নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচার চায় হেফাজত স্ত্রীসহ মৃণাল কান্তি ও বেনজীরের সম্পদ জব্দ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ যশোরে পাচারকারীর জুতার ভেতরে ৮৭ লাখ টাকার স্বর্ণের বার ভুয়া সনদ ও মার্কশিটে মেডিকেল কলেজে বিদেশি শিক্ষার্থীরা ইমেইলে জবানবন্দি দিয়েছেন ২ আ’লীগ নেতা করোনায় নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শহরের নারী কর্মীরা নরসিংদীর রায়পুরায় চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যের লাশ উদ্ধার ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, ৩২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি প্রকল্পের অভাবে স্থবির পতিত জমিতে ফসল উৎপাদন বিশেষ অভিযানে সারাদেশে গ্রেফতার আরও ১৮৩৩ নির্ভুল পাঠ্যবই ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর- শিক্ষা উপদেষ্টা মাদক আর দুর্নীতি দেশের বড় শত্রু- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা গ্যাস সংকটে হুমকির মুখে দেশের শিল্পোৎপাদন একনেক সভায় প্রায় ৯ হাজার কোটির ১৭ প্রকল্প অনুমোদন ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ নয় টিউলিপের মামলা সুনির্দিষ্ট তথ্যে -দুদক চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ও দুদককে উকিল নোটিশ পাঠালেন টিউলিপ মব ঠেকাতে ব্যর্থ হলে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা -ডিএমপি কমিশনার মব সৃষ্টিকারীদের কঠোর বার্তা সরকারের

বহুজাতিকেও ধরাশায়ী বিনিয়োগকারীরা

  • আপলোড সময় : ২৫-০৬-২০২৫ ০৪:২০:০৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৫-০৬-২০২৫ ০৪:২০:০৯ অপরাহ্ন
বহুজাতিকেও ধরাশায়ী বিনিয়োগকারীরা
ডেটল, মরটিন, হারপিক, ভ্যানিশ, লাইজল, ভিটসহ কয়েকটি পণ্যের কল্যাণে বাংলাদেশে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করছে রেকিট বেনকিজার। দেশের পুঁজিবাজারে বহুজাতিক এ কোম্পানিটি তালিকাভুক্ত হয় ১৯৮৭ সালে। ভালো ব্যবসার পাশাপাশি শেয়ারহোল্ডারদের মোট অঙ্কের লভ্যাংশ দেওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বরাবরই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বছরের পর বছর ভালো ব্যবসা করা এবং মোটা লভ্যাংশ দিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করায় দামের দিক থেকে কোম্পানিটির শেয়ার এখন সবার ওপরে। এমন শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এই কোম্পানিটির ওপর থেকেই বিনিয়োগকারীদের আস্থায় যেন চিড় ধরিয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি। ফলে দফায় দফায় কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। শুধু রেকিট বেনকিজার নয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রায় এক ডজন বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে ধরাশায়ী হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এ তালিকায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ, বার্জার পেইন্টস, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার, লিন্ডে বাংলাদেশ, বাটা সু, লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, সিঙ্গার বাংলাদেশের মতো ভালো মৌলভিত্তির প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দফায় দফায় শেয়ার দামে পতন হওয়ায় এক বছরের মধ্যে ১০টি বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ৬ হাজার ৬৮৫ কোটি ১১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩৫ টাকা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগের দিন ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট এবং চলতি বছরের ২৩ জুনে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামের তথ্য পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে পতনের বৃত্তে আটকে থাকা দেশের শেয়ারবাজারে গত এক বছরে পতনের মাত্রা আরও বেড়েছে। যদিও আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর টানা চার কার্যদিবস শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। কিন্তু এরপর থেকেই ধারাবাহিকভাবে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দামে পতন হচ্ছে। এই দরপতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও। শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ার দামে পতনের মূল কারণ শেয়ারবাজারের ওপর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা সৃষ্টি হওয়া। অনাস্থা সৃষ্টি হওয়ার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বড় অঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে। তাদের এই অনাস্থা সৃষ্টির মূল কারণ ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া। এছাড়া বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে অস্থিরতা এবং কোম্পানিগুলোর আয়ে প্রবৃদ্ধি কম হওয়ার কারণেও কিছুটা দরপতন হয়েছে। ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ২৩ জুন সময়ের মধ্যে রেকিট বেনকিজারের প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ১ হাজার ৪২০ টাকা ৬০ পয়সা। স্বল্প মূলধনের প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সম্মিলিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমার পরিমাণ তুলনামূলক কম। ৪৭ লাখ ২৫ হাজার শেয়ারের এই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ৬৭১ কোটি ২৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ১৯৮৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটি সবশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ৩ হাজার ৩৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ৫৫০ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ৯৮০ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ১ হাজার ৬৫০ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ১ হাজার ৪০০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৯ সালে ১ হাজার ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। নিয়মিত বড় লভ্যাংশ দেওয়া এ কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বর্তমানে ৩ হাজার ২৯৯ টাকা ৯০ পয়সা। সম্মিলিতভাবে শেয়ারের দাম সবচেয়ে বেশি কমেছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের। কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৫০ টাকা ২০ পয়সা। এতে সম্মিলিতভাবে শেয়ারের দাম কমেছে ২ হাজার ৭১০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ২৭১ টাকা ৯০ পয়সা। ১৯৭৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটি সবশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ৩০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগের ২০২৩ সালে ১০০ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ২০০ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ২৭৫ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ৬০০ শতাংশ নগদ ও ২০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার এবং ২০১৯ সালে ৪০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। প্রতিটি শেয়ারের দাম ১০ টাকা ৫০ পয়সা কমলেও বড় মূলধনের প্রতিষ্ঠান হওয়ায় লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ১ হাজার ২১৯ কোটি ৪৪ লাখ ২১ হাজার ৭৫০ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৪৪ টাকা ৯০ পয়সা। ২০০৩ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটি সবশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ৩৮ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ৫০ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ৪৮ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ২৫ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ১০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। নিয়মিত মোটা লভ্যাংশ দিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়ানো বার্জার পেইন্টসের শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ১১৪ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ৬৩৬ টাকা। আর প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ২৪ টাকা ৭০ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ হাজার ৭৫৭ টাকা ৫০ পয়সা। ২০০৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটি সবশেষ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ৫০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ৪০০ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ৪০০ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ৩৭৫ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ২৯৫ শতাংশ নগদ এবং ২০১৯ সালে ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ারের প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ২৭৮ টাকা ৬০ পয়সা। এতে শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ৫৩৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৪ হাজার ৯৯৫ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ২ হাজার ৩০৫ টাকা ৩০ পয়সা। হরলিকস, মালটোভা, গ্ল্যাক্সোজ-ডি, সেনসোডাইনের মতো পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করা গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন ১৯৭৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কনজ্যুমার হেলথ কেয়ার ও ফার্মাসিউটিক্যালস-দুই ইউনিটের মাধ্যমে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করলেও লোকসান দেখিয়ে ২০১৮ সালে ওষুধ উৎপাদন কারখানা এবং ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিটের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এই বহুজাতিক কোম্পানিটি। এর পরই ইউনিলিভারের কাছে সব শেয়ার বিক্রি করে দেয় গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন। গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের সব শেয়ার কিনে নেওয়ার পর ইউনিলিভার ২০২০ সালে কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার করে। সবশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৫২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ৩০০ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ২৪০ শতাংশ নগদ ও ৬০ শতাংশ বোনাস শেয়ার, ২০২১ সালে ৪৪০ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ৪৪০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৯ সালে ৫৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। সিঙ্গার বাংলাদেশের প্রতিটি শেয়ারের দাম ২১ টাকা ৯০ পয়সা কমায় সম্মিলিতভাবে কমেছে ২১৮ কোটি ৩৪ লাখ ৯২ হাজার ১৫২ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১০১ টাকা ৯০ পয়সা। ১৯৮৩ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটি সবশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ৩৫ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ৬০ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ৩০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৯ সালে ৭৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। লিন্ডে বাংলাদেশের প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ১৬৯ টাকা ৫০ পয়সা। ফলে সম্মিলিতভাবে শেয়ারের দাম কমেছে ২৫৭ কোটি ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬০ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৮৩৪ টাকা ৪০ পয়সা। ১৯৭৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটি সবশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ৪ হাজার ৫০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ১ হাজার ৫৪০ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ৪২০ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ৫৫০ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ৪০০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৯ সালে ৫০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। বাটা সু’র শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ১৫৪ কোটি ১৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ১১২ টাকা ৭০ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৮০২ টাকা ৭০ পয়সা। ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটি সবশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে ১০৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ৪৩৫ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ৩৬৫ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ৭৫ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ২৫ শতাংশ নগদ এবং ২০১৯ সালে ১২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। হাইডেলবার্গ সিমেন্টের শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ৫৫৭ কোটি ৬৯ লাখ ৩ হাজার ৩৪৬ টাকা। কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৯৮ টাকা ৭০ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ২০৯ টাকা ৯০ পয়সা। ১৯৮৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটি সবশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ২৫ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ২৬ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ২০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৮ সালে ৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত আরএকে সিরামিকসের প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৫ টাকা ৭০ পয়সা। এতে শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ২৪৩ কোটি ৯৪ লাখ ২১ হাজার ৫৯৬ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৮ টাকা ৫০ পয়সা। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটি সবশেষ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ, ২০২০ সালে ১০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৯ সালে ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। ডিএসইর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফ্লোর প্রাইস দিয়ে শেয়ারবাজারের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়। ফ্লোর প্রাইসের কারণে বহু বিদেশি বিনিয়োগকারী লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে শেয়ারবাজার ছেড়েছেন। বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির চাপের কারণে সার্বিক শেয়ারবাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম অর্ধেকের নিচে চলে এসেছে। তিনি বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো খুবই মৌলভিত্তিসম্পন্ন। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের একটা বড় অংশ ছিল বহুজাতিক কোম্পানিতে। বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির কারণে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এছাড়া দেশের ভেতরে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণেও এসব কোম্পানির শেয়ারের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তিনি আরও বলেন, কিছু বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে কমেছে। এটা কিছুতেই স্বাভাবিক নয়। লভ্যাংশ বিবেচনায় কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার এখনো বিনিয়োগের জন্য খুবই আকর্ষণীয়। রাজনৈতিক দল সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিলে এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে যাবে বলে আমরা ধারণা করছি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক রিচার্ড ডি’রোজারিও বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের বড় অংশই ছিল বহুজাতিক কোম্পানিতে। যখন ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়, তখন থেকেই আমাদের শেয়ারবাজারের ওপর থেকে বিদেশিদের সম্পূর্ণরূপে এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। ফলে অনেকেই বিপুল পরিমাণ শেয়ার বিক্রি করেছে। যখন ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হয়েছে, তখন থেকেই তারা বিক্রি করতে থাকে। অনেকেই দাম দেখেনি। তারা মনে করেছে, এটা একটি অসুস্থ বাজার-যে বাজারে প্রবেশের সুযোগ থাকলেও বের হওয়ার সুযোগ নেই। এমন বাজারে প্রবেশ করার দরকার নেই। এ কারণেই আমাদের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বড় আকারে কমে গেছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম কমার এটিই সবচেয়ে বড় কারণ। তিনি আরও বলেন, এবার কিন্তু কয়েকটি বাদে বেশিরভাগ বহুজাতিক কোম্পানির আয় কমেছে। তবে যে পরিমাণে তাদের আয় কমেছে, শেয়ারের দাম কমেছে তার চেয়েও বেশি হারে। এই অস্বাভাবিক পতনের পেছনে মূলত অনাস্থা তৈরি হওয়াটাই বড় কারণ। তবে আমাদের ধারণা, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বা আস্থা ফিরলে এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স